হযরত মোয়াভীয়া রদ্বিঃ কে যারা গালি দেন তারা এই ভিডিও এবং পোস্ট টা পড়ুন - AL YuSuF
হে মাহবুব! আপনি বলে দিন, ‘হে  মানবকুল, যদি    তোমরা       আল্লাহ্‌কে     ভালবেসে    থাকো    তবে  আমার   অনুসারী   হয়ে   যাও,   আল্লাহ্‌   তোমাদেরকে  ভালবাসেন    এবং    আল্লাহ্‌    তোমাদের    গুনাহ    ক্ষমা  করবেন; আর আল্লাহ্‌ ক্ষমাশীল, দয়ালু।

Pageviews

মঙ্গলবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

হযরত মোয়াভীয়া রদ্বিঃ কে যারা গালি দেন তারা এই ভিডিও এবং পোস্ট টা পড়ুন

সাহাবীদের ব্যাপারে সাবধান

মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ আল ইউসুফ

আসসালামু আলাইকুম
প্রিয় ইসলামী ভাই ও বোনেরা! আমাদেরকে অবশ্যই আহলে বায়াত তথা আউলাদে রসূলগনকে ভালোবাসতে হবে।
কেননা হাদিসে পাকে এসেছে
১)👉 মালেক ইবনে আনাস বর্ণিত- রাসূল (সাঃ) বলেছেন- আমি তোমাদের জন্য দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি যতদিন আকড়ে ধরবে ততদিন পথভ্রষ্ট হবে না। একটি হলো আল্লাহর কিতাব এবং অপরটি আমার সুন্নাহ্ (মিশকাত-১ম খন্ড হাদিস নং-১৭৭)
উক্ত হাদিসটি মিশকাতে মুয়াত্তার বরাতে বর্ণিত।
অপর এক হাদিসে এসেছে
২)👉“হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রাঃ) বর্ণিত।তিনি বলেছেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মক্কা ও মদীনার মাঝখানে খোম নামক তালাবের নিকট দাঁড়িয়ে আমাদের মাঝে ভাষণ দিলেন। প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করলেন। তারপর নানারূপ ওয়াজ ও নসীহত করলেন। অতঃপর বললেন, হে লোকগণ সাবধান! নিশ্চয় আমি একজন মানুষই। শীঘ্রই আমার নিকট আল্লাহর দূত আযরাঈল আগমন করবে। তখন আমি আমার প্রভুর ডাকে সাড়া দিব। আমি তোমাদের মধ্যে দুটি মূল্যবান সম্পদ রেখে যাচ্ছি। একটি হল আল্লাহর কিতাব। এর মধ্যে রয়েছে হেদায়াত ও আলো। অতএব তোমরা আল্লাহর কিতাবকে মজবুতভাবে আকড়ে ধর। আর দ্বিতীয়টি হল আমার আহলে বাইত। আমি তোমাদেরকে আমার আহলে বাইত সম্পর্কে আল্লাহর পক্ষ হতে বিশেষভাবে বলছি। (মিশকাত-১১তম খন্ড হাদিস নং-৫৮৮০,৫৮৯২,৫৮৯৬)
এ হাদিসটি মুসলিম,তিরমিযী,মুসনাদে আহমদ সহ আহলে সুন্নাহ বহু গ্রন্থে বিদ্যমান এবং বর্ণনাকারী সাহাবীর সংখ্যা ১১০ জনেরও অধিক।
📌আমরা এইদুইটি হাদিসের মাধ্যমে জানতে পারলাম নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের জন্য তিনটি জিনিস রেখে গেছেন (১)কুরআন (২)আহলে বায়ত (৩) সুন্নাহ / হাদিস।এর মাঝেই প্রমান হয় আহলে বায়তকে ভালোবাসা অবশ্যক।
এবার আসাযাক মূল কথায়..
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের মতে সাহাবাদের ভালোবাসতে হবে। বর্তমান সমাজে কিছু শিয়া মতবাদের অনুসারীরা আহলে বায়তের মোহাব্বতকে কাজে লাগিয়ে  সরলমনা মুসলমানদের ঈমান চুরি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা প্রথমে মোয়াভীয়া রদ্বিঃ কে নিয়ে শুরু করে।
👉 তাদের আকীদা নিম্নরূপ।
তারা বলে,
হযরত মোয়াভীয়া রদ্বিঃ চক্রান্তকারী মুনাফিক । হযরত ওসমান গনি রদ্বীঃ কুরআনের আয়াত সরিয়ে ফেলেছেন যা হযরত আলী রদ্বীঃ শানে নাযিল হয়েছিল। হযরত ওমর ফারুকে আযম রদ্বীঃ মা ফাতেমা রদ্বীঃ ওনার হত্যাকারী। হযরত আবু বকর সিদ্দিক রদ্বীঃ ও মা আয়েশা সিদ্দিকা রদ্বীঃ নবীজির সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ষড়যন্ত্র করেছে। বুখারী শরীফ জাল। (নাউজুবিল্লাহ নাউজুবিল্লাহ)
এইভাবে তারা সরলমনা মানুষের মনে কুফুরী বীজ বপন করে।
আসুন আমরা জানি সাহাবা কারা?
👉 রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যিনি ইমানের সঙ্গে চর্মচক্ষুদ্বারা দেখেছেন এবং ইমান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি সাহাবি। আল্লাহতায়ালা তাঁদের প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গী হওয়ার জন্য নির্বাচিত করেছেন।
সাহাবায়ে কিরামের প্রতি ভালোবাসা ইমানের অংশ। তাঁদের সমালোচনা করা মারাত্মক গোনাহ ও আল্লাহর লানতের শিকার হওয়ার কারণ। একজন মুসলমানের ইমান ও আখেরাত বরবাদ হওয়ার জন্য সাহাবায়ে কিরামের সমালোচনায় লিপ্ত হওয়াই যথেষ্ট।
আসুন আমরা দেখি এই সম্পর্কে কুরআন হাদিসে কী বলে?
১) আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআন শরীফে ইরশাদ করেন
رضي اللّٰه عنهم ورضوا عنه
আল্লাহ তাদের উপর রাজী হলেন,তারাও আল্লাহর উপরে রাজী হলেন। [সূরা আল-বায়্যিনা,আয়াত নং ৮]
২) "মুহাজির ও আনসারদের প্রথম অগ্রবর্তী দল এবং যারা নিষ্ঠার সাথে তাদের অনুসরণ করে আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট। আর তিঁনি তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন জান্নাত,যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত।সেখানে তারা চিরকাল থাকবে,এটাই মহা সাফল্য।[সূরা তওবা,আয়াত নং ১০০]
৩) সূরা নিসার ৯৫নং ও সূরা হাদীদের ১০নং আয়াতে সাহাবায়ে কেরামের সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وكلا وعد الله الحسنى

অর্থাৎ,তাদের (মধ্যে পারস্পরিক তারতম্য থাকা সত্ত্বেও) সবাইকে আল্লাহ তা‘আলা হুসনা তথা উত্তম পরিণতির (জান্নাত ও মাগফিরাতের) ওয়াদা দিয়েছেন।
৪) কিন্তু আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের অন্তরে ঈমানের মহব্বত সৃষ্টি করে দিয়েছেন।পক্ষান্তরে কুফর, শিরক,পাপাচার ও নাফরমানির প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি করে দিয়েছেন।তারাই (সাহাবীগণ) সৎপথ অবলম্বনকারী। [সূরা হুজুরাত,আয়াত নং ৮]
৫) নিশ্চয়ই আল্লহ তায়া’লা ঐ সকল মুসলমানদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন (যাহারা আপনার সফর সঙ্গী), যখন তাঁহারা আপনার সাথে গাছের নিচে অঙ্গীকার করছিলো এবং তাঁদের অন্তরে যা কিছু (ইখলাস ও মজবুতি) ছিল তাও আল্লাহ তায়া’লার জানা ছিল,আর আল্লাহ তায়া’লা তাঁদের অন্তরে প্রশান্তি সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন এবং তাদেরকে একটি নিকটবর্তী বিজয় দান করলেন। (এর দ্বারা খায়বরের বিজয় কে বুঝানো হয়েছে, যা একেবারে নিকটবর্তী সময়ে হয়েছে) আর প্রচুর গনিমতও দান করলেন। [সূরা ফাতহ,আয়াত নং ১৮]

৬) হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা আমার সাহাবীকে ছাব্ব তথা মন্দ বলো না। যদি তোমাদের কেউ এক উহুদ পরিমাণ স্বর্ণও দান করে, তবু তাদের এক মুদ বা তার অর্ধেকের সমপরিমাণও হবে না। [বুখারী, হাদীস নং-৩৬৭৩]
৭)হযরত আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমার সাহাবীকে মন্দ বলবে, তার উপর আল্লাহর, ফেরেশতা এবং সমস্ত মানুষের অভিশাপ। [আলমুজামুল কাবীর, হাদীস নং-১২৭০৯, ফাযায়েলে সাহাবা, আহমাদ বিন হাম্বলকৃত, হাদীস নং-৮]
৮)হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে  আমার সাহাবীকে মন্দ বলে, তার উপর আল্লাহর অভিশাপ। [মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৫৭৫৩, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৪৭৭১, ]
৯) হযরত আলী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি নবীকে [ছাব্ব] মন্দ বলে, তাকে হত্যা কর। আর যে সাহাবীকে [ছাব্ব] মন্দ বলে তাকে প্রহার কর। {জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-২২৩৬৬, জমউল জাওয়ামে, হাদীস নং-৫০৯৭, দায়লামী, ৩/৫৪১, হাদীস নং-৫৬৮৮, আস সারেমুল মাসলূল-৯২}
১০) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- “যখন তোমরা এ ধরনের লোক দেখবে, যারা আঁমার সাহাবীকে মন্দ বলে, তখন তাদের উদ্দ্যেশে বলে দাও,তোমাদের অনিষ্টের উপর আল্লাহর অভিশাপ হোক”।[তিরমিযী ২য় খন্ড-২২৫ পৃঃ ‏]
১১) সাবধান!তোমরা আঁমার সাহাবীগণের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। আঁমার পরে তোমরা তাঁদেরকে (তিরস্কারের) লক্ষ্যবস্তু বানাইও না। যে ব্যক্তি তাঁদের প্রতি ভালোবাসা পোষণ করে সে আঁমার প্রতি ভালোবাসা বশেই তাঁদেরকে ভালোবাসে। আর যে ব্যক্তি তাঁদের প্রতি শত্রুতা ও বিদ্বেষ পোষণ করে সে আঁমার প্রতি বিদ্বেষবশতঃ তাঁদের প্রতি শত্রুতা ও বিদ্বেষ পোষণ করে থাকে”।
১. তিরমিযী-৩৮৬১ , ২. ইবনে হিব্বান, হাদিস নং ২২৮৪, ৩.মুসনাদে আহমদ,৪র্থ খন্ড,পৃ:৮৭, ৪. আস-সুন্নাহ,ইবনে আবি আসেম, হাদিস নং ৯৯২
১২)সাহাবীদেরকে সম্মান করতে হবে,তাদের সমালোচনা করা যাবে না কারনঃ নবীজী সাল্লাল্লাহু-আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন “তোমরা আঁমার সাহাবীদের সম্মান করবে (কারণ তারাই তোমাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ); তাদের পর পরবর্তী যুগের মানুষদের (তাবেঈ), এবং এরপর তাদের পরবর্তী যুগের মানুষদের (তাবে- তাবেঈন)।। আর এরপর মিথ্যা প্রকাশিত হবে।।”
১. সুনান নাসাঈ- ৫/৩৮৭, ২. শরহে মা’আনিল আসার ত্বাহাবী- ৪/১৫০, ৩. মুসনাদ এ হুমাইদী- ৩৭ পৃষ্ঠা [হাদিসটির সনদ সহিহ]
১৩) হযরত ইমরান বিন হুসাইন (রা:) থেকে বর্ণিত,রাসূল (ﷺ) বলেন, আঁমার উম্মতের মধ্যে সর্বোত্তম তারা যারা আঁমার যুগে রয়েছে। অতঃপর তাদের পরবর্তী যুগের উম্মাত (তথা তাবেয়ীগনের যুগ) অতঃপর তাদের পরবর্তী যুগের উম্মাত। (অর্থাৎ, তাবয়ে তাবেয়ীনের যুগ)। ১. বুখারী ৪/২৮৭- ২৮৮, ২.:মুসলিম ৪/১৯৬৪

আরো অনেক দলিল রয়েছে। এখন কথা হলো যারা কুরআন সুন্নাহ হাদিস মানবে তাদের জন্য দলিল। আর যারা কুরআন হাদিসই মানে না তাদের জন্য কিছু বলার নেই।
এর মাঝে কিছু ভাই আছেন যারা তরিকত পন্থি কিন্তু ভুল বুঝাবুঝির কারণে সাহাবাদের গালি দিয়েছেন।
আপনারা দয়াকরে এই ছোট ভিডিওটি দেখুন আলোচক মুফতী আলাউদ্দিন জিহাদী মাঃ সাহেব
👇

আল্লাহ পাক সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন আমিন 🤲

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন